জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'দাঁড়িয়ে মোহনায়'।

আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ১১:৩৯

দাঁড়িয়ে মোহনায়

 

সবে এসে মেশে অবশেষে, জীবনের মোহনায়
সার্থক হয়, হারিয়ে নিজেকে প্রকৃতির অসীমতায়।

সাগরের বুকে হলেই নিঃশেষ
নদীর কাহিনী হয় কি শেষ!
সহস্র পথ ঘুরে মাতৃ কোলে ফিরে
নদীর মত হয় কি জীবনেরও পরিশেষ!

সব জীবনের একই সুখ দুঃখ খেদ
কেবল স্থান কাল পাত্র ভেদ।
সব হারিয়ে শেষে, অসীমের সাথে মেশে
নাম গোত্রহীন ঠিকানাহীন এক দেশে
বিনা কোন বেশে।

গর্জন শুনি চমকে প্রবাহিণী, থাকে থমকে দাঁড়িয়ে
সমুখে মোহনা, ভাঙ্গিছে স্রোত তুলিছে ফেনা
ডাকিছে দুহাত বাড়িয়ে।

অসীম সমুদ্র, যেন বিমূর্ত রুদ্র
সেই দিকপাল সর্বাধার বিশাল, বহিছে অনন্তকাল
বাকি সব নগন্য ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র।

বুক ভরা ভয়, কি যে হবে হায়!
চলার পথে যা নিয়েছে হাতে
হারাবে আজি সব যা আছে সাথে!

মনে চায়, পিছে ফিরে একটু তাকায়।
হায়! মন আফসোসে ভরে যায়;
ছিল কত মান সম্মান, ছিল সে মহানুভব মহান!
বহিত নিরবধি, উঁচু নাম গোত্র বর্ণীল এক নদী।

পড়ে রল যা কিছু নিল সব তা পিছে
ছিল যা এতকাল কাছে, সব হল তা মিছে!

নাম যশ মেলা, রং ঢং চলা বলা, রঙ্গিন জীবন
সব তা ছিল দেহের আবরণ!

হায়! বুঝিত যদি, দেহ বিনা নদী, সে শুধু জল
হারাবে সাগরে চিরতরে, কেহ আর চিনিবেনা তারে
হবে সে রং ঢং গন্ধ গোত্র বিহীন সীমাহীন অতল।

জীবন এপারে, কাটিল রুপ রসে ভরে
ভাঙ্গিয়া গড়িয়া দুকূল, সমুখে চলিতে রহিত ব্যকুল।
দেখি ওপারে যা, সব ঝাপসা তা, চর্ম চক্ষু পুরোই বৃথা
সুখ দুঃখ ব্যথা, না জানি কি আছে সেথা!

যত ভিন্নতা বাক বাড়ম্বতা যা ছিল এপারে
ছেড়ে সব তার একই আকারে সব নিরাকার ওপারে!