জীবন থেকে ঘটনা উদ্ভূত ভাবনার প্রেক্ষিতে রচিত নৈতিকতার উপাখ্যান 'জীবন চলা'

আপডেট: ১৪ Jul ২০২২, ১৬:০১

জীবন চলা

 

দোতলার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে অন্যমনস্ক ভাবে সামনে খালি রাস্তার উপর গ্লাস ধোয়া ময়লা পানি ছুড়ে ফেলে দিলাম।
অবচেতন চোখে এটা নিশ্চিত দেখেছিলাম যে কোন মানুষ ছিল না সেখানে। আর অবচেতন মনে এটাও ছিল যে পানিটা পাকা রাস্তাই ফেলাটা তেমন দোষের কিছু না।
তবে অবচেতন মনের চোখ দুটো রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা কুকুরটাকে দেখেছিল কিনা ঠিক নিশ্চিত না।
পানি গিয়ে পড়লো দাঁড়িয়ে থাকা কুকুরটার গায়ে।
বলা বাহুল্য কুকুরটার অস্বস্তি লাগলো। সে একটু ডানে বায়ে তাকাল। কাউকে দেখতে না পেয়েই বোধহয় উপরের দিকে তাকাল।
আমাদের চোখাচোখি হল।
ও একটু ঘেউও করল না। স্বভাবগত ভঙ্গিতে শরীরটা কয়েকবার ঝেড়ে নিল। বিধাতার দেয়া তাদের এ এক অভাবনীয় সামর্থ্যতা।
তাতে মনে হল ওর গাটা শুখিয়ে গেল। আরো মনে হল গায়ে লেগে থাকা ধুলো ময়লা কিছুটা ধুয়েও গেল।
নির্জন রাস্তার আশ পাশ থেকে অন্য একটা কুকুর ওর কাছে আসলো। বন্ধু কুকুরটা ছেলে না মেয়ে সেটা বলতে পারবো না, তবে বন্ধুটি ওর ভেজা গায়ের উপর বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ওর মুখ মাথা বুলাতে লাগলো।
ওরা কেউ আর একবারের জন্যও আমার দিকে তাকাল না।

আমার ফেলা গ্লাস ধোয়া পানি কুকুরটাকে যেমন তার শরীর ধুয়ে মুছে সুন্দর করতে কিছুটা সাহায্য করল তেমনি ওদের দুজনের মধ্যে ভালবাসা প্রকাশের একটা সুযোগও যেন সৃষ্টি করল।

এতক্ষণে আমি নিজের কথা ভাবার ফুঁসরত পেলাম। বলা বাহুল্য, অবচেতন মনে করা কাজটার ব্যাপারে আমার মধ্যে একটা বোধোদয় হল।

- মনুষ্য সমাজ এমনি ভাবে অপরের ইচ্ছে বা অনিচ্ছেই কৃত ছোট খাট অন্যায় গুলোর জন্য প্রতিশোধ মুলক কোন আচরণ না করে সেটাকে যদি ইতিবাচক ভাবে ব্যবহার করতে পারতো তাহলে বোধহয় পৃথিবী থেকে হানাহানি এমনিতেই বন্দ হয়ে যেত।