জীবন থেকে নেয়া কাহিনী অবলম্বনে রচিত ছোট গল্প 'কদম বারকুচি'।।

আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩, ১১:১৩

কদম বারকুচি

 

শিশু বয়সে মা বাবা হারানো কদম আলী বালক বয়সে এক আফগান ব্যবসায়ীর হাত ধরে দেশ ছেড়েছিল। তারপর নানা ঘাট ঘুরে কাজাকস্থানের সাথে মঙ্গোলিয়ার সীমান্তে যাযাবর এক কাজাক শিকারি পরিবারে আশ্রয় মিলেছিল তার।
সে পরিবারের সাথে থেকে কদম আলী খুব দক্ষ ঈগল শিকারি হয়ে ওঠে। তারপর একদিন গোল্ডেন ঈগল শিকার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে কদম আলী কদম বারকুচি নাম ধারন করে।

যাযাবর কাজাকদের একটি প্রবাদ কদম আলীকে বিশেষ ভাবে আকৃষ্ট করত। সেটা হল;
‘একটি দ্রুত ঘোড়া আর উঁচুতে উড়া একটি ঈগল, শিকারি যাযাবরদের প্রকৃত ডানা’।
কদম বারকুচির ঈগল শিকারি হয়ে উঠার মূলে ছিল এই কাজাক প্রবাদে বিশ্বাস। সেই বিশ্বাসই তাকে পাকা শিকারি হতে সহায়তা করে।

শিকারের প্রধান দুই হাতিয়ার; দুরন্ত ঘোড়া আর উঁচুতে দুর্বার গতিতে উড়তে সক্ষম ঈগল। এ দুটো হাতিয়ার সাথে থাকলে যে কোন দৃঢ়চেতা ব্যক্তিকেই লক্ষ্য ভেদ করে নিশ্চিত ভাবে শিকার ধরা থেকে কেউ আটকাতে পারে না।
এ অভিজ্ঞতা থেকে কদম বারকুচির মনে একটা বিশ্বাস দৃঢ় ভাবে গ্রথিত হল, তা হচ্ছে কাউকে নিজের উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহার করতে হলে তাকে তার মুক্ত চিন্তা থেকে বিরত করতে হবে। তারপর ছলে বলে কৌশলে তার চিন্তা চেতনাকে সঙ্কুচিত করে একক ভাবে নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যবহার করতে হবে। নিজ লক্ষ্য বলে তাদের কিছু থাকলে চলবে না, দেয়া লক্ষ্যকেই প্রাধান্য দিয়ে তারা তাদের সব শক্তি সামর্থ্য সে দিকেই নিবদ্ধ করবে। বিনিময়ে কেবল তাদের জীবন জীবিকার চাহিদা মিটাতে হবে।
কদম বারকুচি লক্ষ্য করল শিকারের জন্য ব্যবহৃত প্রাণী দুটোকে তাদের জন্মগত কিছু সামর্থ্যের জন্য বেছে নেয়া হয়েছে। আর সে সামর্থ্যকে তাদের মত করে ব্যবহার না করতে দিয়ে শিকারির পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহার করার জন্য তাদেরকে মনস্তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
কদম বারকুচি আরো লক্ষ্য করল যে ঘোড়া তার মুখের ভিতর লাগামের বিট ঢুকাতে দিয়ে লাগাম পরিধান করা আর দুটি প্রাণীই ছোখে ঠুলি পরাটা মেনে নেয়ার ফলেই বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের প্রকৃতি প্রদত্ত গুনাগুণকে নিজের উদ্দেশ্য সাধনে কাজে লাগায় শিকারি।

চোখে ঠুলি লাগানোর বিশেষত্ব হল তাদের তীক্ষ্ণ চক্ষু তাদের নিজেদের ইচ্ছে মত বা তাদের নিজেদের প্রয়োজন মত সবকিছু না দেখে শিকারি তার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য যেদিকে বা যা দেখতে বলে ওরা তাই দেখবে। তার পর শিকারির ইঙ্গিতে ছুটে যাবে সেদিকেই।

ঘোড়ার বেগময়তা আর ঈগলের বিদীর্ণকারী চোখ দিয়ে দূরের শিকার দেখে তার উপর ছোঁ মেরে ধারালো নখর গেঁথে শিকারকে কাবু করার জন্মগত ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে শিকারিরা তাদের শিকার ধরে জীবিকা নির্বাহ করে।
ছোখে ঠুলি পরা ঈগলের চারধারে সর্বক্ষণ একই কণ্ঠস্বর শোনানো আর ঘোড়াকে নির্দিষ্ট লাগামের টানকে অনুসরণ করার প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে প্রভু চেনার প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

দুটো প্রাণীই একান্ত প্রভুভক্ত হয়ে কাজ করে। যা শিকারির সাফল্যের জন্য অনিবার্য।
নিজেদের শারীরিক প্রয়োজন মিটাতে, আর জঙ্গলে অন্যান্য পশুর হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে প্রানী দুটো সব সময় তৎপর। দূটো ক্ষেত্রেই জীবন বাঁচানোর তাড়না।
শিকারি এদেরকে প্রশিক্ষন দিয়ে তাদের ক্ষমতাকে নিজের উদ্দেশ্য সাধনে কাজে লাগায় আর তার বিনিময়ে শিকারি প্রাণী দুটোর খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে জীবনের নিরাপত্তা প্রদান করে। প্রাণী দুটো বোঝে যে মনিবের কথা মত কাজ করলে মনিব তাদের চাহিদা পূরণ করবে।
লাগাম লাগান ঘোড়া আর চোখে ঠুলি পরা প্রশিক্ষিত ঈগলকে শিকারি তার নির্দিষ্ট করা শিকার ধরার কাজে ব্যবহার করে। তারা শিকারির পছন্দ অনুযায়ী শিকার ধরে নিজেদের প্রয়োজন মিটাতে নয়। কারণ সেটা তাদের মনিব করে থাকে। মনিবের হয়ে কাজ করলে তারা পুরষ্কার পায় আর না করলে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হয়।
শাস্তি আর পুরষ্কার এ দুটো বিষয় সব প্রাণীদেরকে মনিবের কথামত কাজ করতে অনুপ্রেরণা যোগায়।

এ বিশ্বাস দৃঢ় ভাবে মনে গেঁথে মাঝ বয়স পার করে কদম বারকুচি কাজাক পরিবার থেকে পালিয়ে পাহাড় জংগলের পথ ধরে দেশে ফেরার পথে ভাইদের কাছে রাজত্ব হারিয়ে দুর্গম পাহাড় জংগলে আশ্রয় নেয়া এক রাজার সাথে সাক্ষাৎ হয়।
রাজ্যহীন রাজা কদম বারকুচির জীবনের গল্পে অনুপ্রাণিত হয়ে তার পরামর্শে এবং প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় অকৃতজ্ঞ ভাইদের কাছ থেকে রাজ্য পুনরুদ্ধার করতে সামর্থ্য হয়।
রাজ্য ফেরত পেয়ে রাজা কৃতজ্ঞ চিত্তে কদম বারকুচিকে তার রাজ্যের সেনা মন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত করে।
তেজী ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে, ক্ষুরধারা নখর ও নম্বা বঁড়শির ন্যায় বাঁকান ভীতি প্রদর্শনকারী চঞ্চু আর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি সম্পন্ন প্রশিক্ষিত ঈগল দিয়ে শিকারে চ্যাম্পিয়ন শিকারি কদম বারকুচির নজর আশে পাশের রাজ্যের উপর পড়ে।
সে রাজ্য গুলো করায়াত্ব করার উপযুক্ততা বর্ণনা করে কদম বারকুচি রাজাকে আশে পাশের সব রাজ্য নিজের কবলে নেয়ার পরামর্শ দেয়।
রাজার প্রতি মন্ত্রীর আনুগত্যের ব্যাপারে কোন কমতি নেই সে কথা রাজা জানেন। তাই, রাজা তাতে তার পূর্ণ সম্মতি জানিয়ে কদম বারকুচিকে রাজ্য জয়ের অনুমতি দেন।

মানুষ ভবিষ্যৎ সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ তাই ভবিষ্যৎ একটা ভয় আর অনিশ্চয়তার জায়গা। তাইতো মানুষ সবাই ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করে সেটাকে নিশ্চিত করে ভয় দূর করতে চায়। মানুষ ভবিষ্যতকে ভয় পায়।
দক্ষ গোল্ডেন ঈগল শিকারি কদম বারকুচি বুঝতে ভুল করল না যে কোন জনগোষ্ঠীকে একত্রিত রেখে একমাত্র নেতার অনুগত হয়ে চলার জন্য প্রশিক্ষণের সোজা রাস্তা হচ্ছে তাদেরকে অজানা ভয়ে রাখা। আর সেটা ভবিষ্যতের ভয়। যেটা প্রমাণ করতে হলে একজনকে ভবিষ্যতে যেতে হবে। যা সম্ভব নয়।
প্রেরণার মাধ্যমে মুক্ত চিন্তা করার উৎসাহ সৃষ্টি করেও মানুষকে দলবদ্ধ রাখা যায়। কিন্তু মুক্ত চিন্তা করা জনগোষ্ঠী স্বচালিত হয় আর তাই তারা অভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ করে বটে কিন্তু কোন নেতা তাদেরকে নিজের মত কোন নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য কাজে লাগাতে পারে না। জীবনের কাছ থেকে সে কথা শিখেছে কদম বারকুচি।
দক্ষ ঈগল শিকারি হতে প্রায় বিশ বছর সময় লেগেছিল কদম বারকুচির আর রাজার দেয়া কাজে তার দক্ষতা প্রমাণের জন্য দু বছর সময় চেয়ে নিল রাজার কাছ থেকে।
-আপনি প্রজাদের সাথে এ দু বছর কোন সাক্ষাৎ দিতে পারবেন না। সবই আপনার নামে চলবে, তবে প্রজারা কেবল আপনার নাম শুনবে কিন্তু আপনার সাথে কথা বলাতো দূরের কথা চোখেও যেন দেখতে না পায়। আপনি থাকবেন কেবল তাদের চিন্তায় আর বিশ্বাসে। আমি আপনার নামে সব কিছু করব কারণ সবাই মানে যে আপনিই একমাত্র সর্বেসর্বা। সবার কাছে আপনার কথাই শেষ এবং প্রশ্নাতীত।

রাজার কাছ থেকে এই অঙ্গীকার আদায় করে কদম বারকুচি রাজাকে অন্তর্ধানে পাঠিয়ে দিল। তারপর সব কিছুই ধীরে ধীরে নিজের হাতের মুঠোই নিয়ে নিল। প্রজারাদের সবাইকেই বুঝাতে সামর্থ্য হল যে কদম বারকুচি রাজার ছায়া এবং সে যা করে তা সব রাজার আদেশেই করে। সকল প্রজা ধীরে ধীরে তা বিশ্বাস করল।
কদম বারকুচি ধীরে ধীরে রাজার নামে অনেক ডিক্রী জারী করল। তার মধ্যে কিছু কিছু ডিক্রির ব্যাপারে কারো কারো মনে প্রশ্ন দেখা দিলে এ কিছুর ব্যাখ্যা কেবল তিনিই দিতে পারবেন যিনি প্রকৃতই এই ডিক্রী জারী করেছেন বলে তাদের মুখ বন্দ করা হল।
বছর দুই পার হওয়ার আগেই কদম বারকুচি একটা প্রশিক্ষিত অনুগত বাহিনী গড়ে তুলল।
রাজার আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করে তার উদ্দেশ্য সাধন করতে পারলে তাদের জীবন ধারণের সব দায়িত্ব রাজার। আর রাজার সন্তুষ্টি তাদের সাথেই থাকবে।
রাজার আদেশ বিনা প্রশ্নে পালন করাই তাদের জীবনের একমাত্র উদ্দেশ্য বলে রাজ্যের সবাই তা মেনে নিল। অনেকটা গোল্ডেন ঈগল হান্টারের লাগাম ধারী প্রশিক্ষিত ঘোড়া আর ঠুশি পরা প্রশিক্ষিত ঈগলের মত।
সঠিক ভাবে আর ভাল শিকার করলে যেমন প্রশিক্ষিত ঘোড়া আর ঈগলকে শিকারের ভাগ স্বরূপ আলাদা খাতির যত্ন আর উন্নত মানের খাবার পরিবেশন করা হত, ঠিক তেমনি নতুন নতুন রাজ্য জয়ের পর কদম বারকুচি প্রশিক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের অতিরিক্ত মাসহারা প্রদানের ব্যবস্থা করল। আর সর্বোপরি তাদের জন্য রাজার সন্তুষ্টি তো আছেই।
কয়েক বছরের মধ্যেই আশে পাশের যত রাজ্য তার সব কদম বারকুচি তার রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করে নিল। আর নিজেকে মন্ত্রীর পরিবর্তে ছায়া রাজা বলে ঘোষণা দিল।
কিছু প্রজা বিভিন্ন ডিক্রী সম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করে কদম বারকুচিকে নানাভাবে তার কাজে বাধা প্রদান করতে চাইল। তাতে ছায়া রাজা একদমই বিচলিত না হয়ে সে ক্ষেত্রে তার ঈগল শিকারির অভিজ্ঞতা কাজে লাগালো।
প্রশিক্ষণের সময় কিছু ঘোড়া আর ঈগল অতি সহজেই পোষ মানত। আর যারা তা মানত না তাদের জন্য কিছু শাস্তি আর অতিরিক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে তাদেরকে বাগে আনতে হত। তেমনি ভাবে এই ভিন্ন মতাবলম্বীদের জন্য পৃথক পৃথক শাস্তি আর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করল কদম বারকুচি।
কদম বারকুচি রাজ্যের ছায়া রাজা। ছায়ার পিছনে যে কায়া অর্থাৎ প্রকৃত রাজা তাকে আর জনসন্মুখে দেখা গেল না। কদম বারকুচিই ছায়া এবং কায়া হয়ে সবার মনে স্থান করে নিল।

কদম আলীকে পৃথিবী জন্ম থেকেই বঞ্চিত করেছে। তাইতো তার জীবনটা নিরেট বাস্তবতার ভিতর দিয়েই প্রবাহিত হয়েছে, যা ছিল অন্ধকারে ভরা। এক বন্ধুর পরিবেশে নিষ্ঠুর প্রতিযোগিতা পূর্ণ সমাজে নিজের বুদ্ধি ধৈর্য আর সহ্যের বিনিময়ে কদম আলী কদম বারকুচি হয়ে নিজেকে আজকের এই জায়গায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।
কদম আলী কাজাকীদের সাথে শিকার প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ান হয়ে কাজাক যাযাবর পরিবারে নিজের স্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছিল। আর শেষে পরিবারের বড় ছেলে হটাৎ করে মৃত্যু বরণ করলে সে তার সুন্দরী স্ত্রীকে বিয়ে করেছিল। পুত্র শোঁকে মুহ্যমান থেকে বিলাপ করতে করতে অকালেই পরিবার প্রধানের মৃত্যুর পর কদম বারকুচি সে গোত্রের প্রধানের দায়িত্ব গ্রহন করেছিল।
কদম বারকুচি তিনটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়েছিল। তার স্ত্রী তার পূর্বের স্বামীর মৃত্যুর জন্য মনে মনে কদম বারকুচিকেই দায়ী করত সেটা জানত সে। কিন্তু তার শিকারি বিচক্ষণতা যখন বুঝতে পারল যে তার স্ত্রী ধীরে ধীরে তার বেড়ে ওঠা সন্তানদের মধ্যে সে ভাবনাটা বিস্তার করছে তখন সে পালিয়ে যাযাবর পরিবার ত্যাগ করে দেশে ফিরে এসেছিল।
জীবনের এই সন্ধিক্ষণে এসে ছায়া রাজা কদম বারকুচির মানস পটে বারবার সে ঘটনাটা ভেসে উঠতে লাগলো। তার স্ত্রী যেমন সর্বক্ষণ তার দিকে সন্দিগ্ধ দৃষ্টিতে তাকাত সেই একই দৃষ্টি কদম বারকুচি তার প্রাসাদের অনেকের চোখে দেখতে লাগলো। কদম বুঝল তার সময় শেষ হয়ে আসছে।

কাজাক যাযাবর শিকারিরা ছোট বয়সী ঈগলের বাচ্চাদের পোষ মানিয়ে দীর্ঘ প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজেদের শিকারের কাজে লাগায়। তার পর ঈগলের বয়স বেড়ে তারা তাদের ক্ষিপ্রতা হারাতে থাকলে শিকারি বৃদ্ধ প্রশিক্ষিত ঈগলকে জংগলে ছেড়ে দিয়ে আসে বাকি জীবন কাটানোর জন্য।
শিকারির প্রশিক্ষিত ঈগল যৌবন ভর শিকারির হয়ে কাজ করার বিনিময়ে একটা নিরাপদ জীবন পেলেও তাদের বাকি জীবন পাহাড় জংগলে কি ভাবে কাটে তা অনুমান করা শক্ত।
কিন্তু কদম আলী তো জঙ্গলের পাখি না এ সমাজেরই মানুষ। এই পড়ন্ত বয়েসে তার বাকি জীবন কি ভাবে কাটবে তা অনুমেয়