জীবন থেকে নেয়া কাহিনী অবলম্বনে রচিত ছোট গল্প 'ছদরুদ্দিন ছেদা'। ।

আপডেট: ০৪ Jul ২০২৩, ১০:২৩

ছদরুদ্দিন ছেঁদা

 

বদর আর ছদর দুই বন্ধু। সম বয়সী, ছোটকাল থেকে একই স্কুলে একই ক্লাসে লেখাপড়া করে বর্তমানে দুজনই তাদের মফঃস্বল শহরের একই কলেজে ডিগ্রীতে অধ্যায়নরত।
মেধা, চেহারা আর সরলতা সব দিক দিয়ে বদর ছদরের থেকে এগিয়ে। অপরদিকে ছদর ওর কমতিটুকু সকলের সাথে খোলামেলা ভাবে মেলামেশা করে আর চাতুরতা দিয়ে পুষিয়ে নেয়।
ওদের কলেজের প্রাক্তন ছাত্র বর্তমান সরকারের এক মন্ত্রী আসলেন ওদের কলেজ পরিদর্শন করতে। মন্ত্রী হওয়ার পর এটাই তার প্রথম সফর। ঋণ শোধের মানসিকতা থেকে তিনি তার নিজের কলেজকে পরিদর্শনের জন্য বেছে নিয়েছেন।
কলেজের জন্যও এটা একটা গর্বের বিষয়। তাই কলেজ কর্তৃপক্ষ জাকজমক পূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে মান্যবর মন্ত্রীকে সংবর্ধনা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছে।

বদরের উপর ভার পড়ল ছাত্রদের পক্ষ থেকে মন্ত্রী মহোদয়কে স্বাগত বক্তব্য দেয়ার জন্য। বদর নিজের মত করে একটা নাতিদীর্ঘ বক্তৃতা লিখে প্রিন্সিপালকে দিয়ে চেক করিয়ে নেয়ার সময় প্রিন্সিপাল সাহেব মন্ত্রী মহোদয়কে ‘এ কলেজের সর্বকালের সর্বসেরা গর্বের ধন’ বলে সন্মোধন করতে বলাই বদর তাতে মৃদু আপত্তি করে ‘সর্বকালের সর্বসেরা’ কথাটা বাদ দেয়ার কথা বলল। কিন্তু প্রিন্সিপাল তাতে রাজি না হয়ে বললেন –এটা একটা সেনসিটিভ বিষয়, রাজনৈতিক মহল থেকে এভাবেই নির্দেশনা এসেছে’। ব্যাপারটি বদর মন থেকে কিছুতেই গ্রহন করতে না পারায়, কি করবে সে ব্যাপারে দ্বিধান্বিত হয়ে রইল।

ছদরের উপর ভার পড়ল গাড়ী থেকে মন্ত্রী মহোদয় নামার পর কলেজের প্রিন্সিপাল সহ যারা তাকে অভ্যর্থনা করবেন তাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করার।
এ সব কাজে ছদরের জুড়ি মেলা ভার। সে সময়ের অনেক আগে থেকেই মন্ত্রী মহোদয় যে স্থানে নামবে সেখানটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে মন্ত্রী মহোদয়ের আগমনের সময় সম্পর্কে আগাম খবর অভ্যর্থনাকারীদের সঠিকভাবে জানানো ইত্যাদি কাজে নিজেকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিয়োজিত করল।
মন্ত্রী মহোদয়ের সংবর্ধনা উপলক্ষে, বদর কলেজের অডিটোরিয়ামে, আর ছদর কলেজের গেটে ব্যস্ত হয়ে পড়ল।

মন্ত্রী মহোদয়ের আগমনের প্রায় আধা ঘন্টা আগে তার পার্টির স্থানীয় নেতারা এসে কলেজে হাজির হল। তারা মিলে মন্ত্রীর নিরাপত্তার দোহায় দিয়ে অভ্যর্থনার জন্য করা কলেজের পুরো প্লানকে উল্টা পাল্টা করে দিল।
অভ্যর্থনার স্থল থেকে সবাইকে সরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র কলেজের সভাপতি আর প্রিন্সিপ্যাল সহ পার্টির লোক আর তাদের বিশ্বস্ত কিছু ছাত্র সেখানে দাঁড়াবে বলে জানাল।
মন্ত্রীকে অভ্যর্থনা করার জায়গাটা গাছের নিচে ছায়া ঢাকা। ফলশ্রুতিতে মন্ত্রীর সাথে পড়ালেখা করা ওই কলেজের কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র যাদেরকে অভ্যর্থনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাদের সহ ছদর দূরে খোলা মাঠে কাঠ ফাটা রোদে গিয়ে দাড়াতে হল।
এই কলেজের একজন প্রাক্তন ছাত্র এখন মন্ত্রী, সবার মনেই একটা গর্ববোধের সৃষ্টি হওয়াতে কলেজের ছাত্র ছাত্রী সহ অন্যান্য শিক্ষক ও অবিভাবকেরা সময়ের অনেক আগেই হাজির হলেও নিরাপত্তার আলোকে সবাইকেই দূরে দাড়াতে হল।
মন্ত্রী মহোদয় আসার রাস্তায় কয়েকটা অনির্ধারিত পথসভায় যোগদান করার ফলে তিনি সময়ের প্রায় দুই ঘন্টা পর কলেজ প্রাঙ্গনে আসলেন।
এত দেরী দেখে এই গরমের দিনে অডিটোরিয়ামে বসা সব ছাত্র ছাত্রী দু এক জন করে বেরিয়ে আসতে আসতে বলা যায় অডিটোরিয়াম খালি করে সবাই বাইরে বেরিয়ে কলেজের বারান্দায় বা গাছের ছায়াই দাঁড়িয়ে বসে গল্প গুজবে লিপ্ত হয়ে পড়ল।

-আপনারা কি মন্ত্রী মহদয়ের সাথে একই ক্লাসে এই কলেজে পড়তেন?
-হ্যে, স্কুল জীবন থেকেই আমরা এক সাথে লেখাপড়া করেছি।
ছদর কাঠফাটা রোদে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন কথার ছলে মন্ত্রী মহোদয়ের বন্ধুদের সাথে অন্তরঙ্গ হয়ে উঠল।
-ওই যে মাঠের ওধারে পুখুরের পাড়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকা নারকেল গাছের সারি দেখছো ওগুলো আমারা যখন ফার্স্ট ইয়ারে পড়ি তখন লাগানো। সে কত আগের কথা, এখন ওগুলো কত বড় হয়ে দেখ কত ডাব নারকেল ঝুলছে, কি সুন্দর দেখাচ্ছে তাই না?
নারকেল গাছের সারির দিকে এর আগেও খেয়াল করেছে ছদর কিন্তু আজ মন্ত্রীর স্মৃতি বিজড়িত গাছগুলো বেশ ভাল করে খেয়াল করে সে গুলো দেখতে লাগল।
-কি দেখছো? ওগুলোর যত বয়স তার অনেক আগে থেকে মন্ত্রী মহোদয়ের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব।
একালের ছাত্র ছদর কে বোঝানোর জন্য একজন প্রাক্তন ছাত্র কথাটা বলল।
ছদরের মনে কিছুটা আফসোস জমা হল। এত কাছের মানুষগুলোকে তাদের প্রিয় মন্ত্রী বন্ধুর কাছে যেতে দেয়া হচ্ছে না, পরিবর্তে মন্ত্রী হওয়ার পর জোটা নব্য সাঙ্গ পাঙ্গরা মন্ত্রীর কাছের মানুষ হয়ে উঠেছে।
-মন্ত্রী হয়তো খেয়ালই করবে না যে, নিরাপত্তার দোহায়ে তার কাছের মানুষগুলোকে দূরে রেখে এভাবে কষ্ট দেয়া হচ্ছে।
কথাটা ভেবে ছদরের মনে একটু কষ্ট বোধের উদ্দ্রেগ হল। ভাবল –আচ্ছা আজকের মন্ত্রীও একদিন সবারই একজন ছিল, তাহলে বিষয়টা বুঝতে তার বেগ পাওয়ার কথা না। তাহলে মন্ত্রী হলেই মানুষ কি ইচ্ছে করেই সে সব ভুলে যায়?

-বুঝলে ছদর, দেখবে ঝাড় থেকে বাঁশ কাটতে গেলে সব সময় কঞ্চি গুলো বাধা হয়ে দাঁড়ায়। বাঁশের জন্মের অনেক পর কঞ্চিগুলোর জন্ম, তবুও ওরাই বাঁশটাকে ঘিরে রাখে, অন্য বাশগুলোকে যথাসম্ভব দূরে ঠেলে রাখে। ঝাড়ে থাকলে বাঁশ কেবলই বাশ, বেশী কিছু না। কিন্তু সেটাকে কেটে মানুষের কাজে লাগালে সেই বাঁশ মানুষকে বিভিন্ন ভাবে সেবা করে নিজের জন্মটাকে সার্থক করে।
মন্ত্রীর বয়সী, তার সহপাঠী একজন বয়োজ্যেষ্ঠ প্রাক্তন ছাত্রের কথা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ছদর শুনতে লাগলো।
-কিন্তু দুঃখের বিষয় কি জান, বাশ আত্মতুষ্টি আর তার নিজের গুণকীর্তনে এমন ভাবে মোহিত থাকে যে কঞ্চিদের অপকর্মকে হয় খেয়াল করে না নয়তো গ্রাহ্যই করে না।
-মন্ত্রী তো আপনাদের সাথে এই কলেজে পড়তেন, তখন আপনারা একত্রে কখনো এমন পরিস্থিতির সন্মুখিন হননি বা শোনেননি?
ছদরের প্রশ্নে মন্ত্রীর এককালের বন্ধু ছাত্ররা একে অপরের মুখ চাওয়া চাওয়ি করল। তারপর তারা কয়েকজন নিজেদের মধ্যে নিচু স্বরে কিছু আলোচনা করে নিল।
-তুমি বয়সে আমাদের অনেক ছোট, তবুও তোমাকে বলি, কারণ তুমি না জানলেও ব্যপারটা এ অঞ্চলের অনেকেই জানে।
ছদর অনেকটা অবাক হয়ে তাকাল মন্ত্রীর সহপাঠী বন্ধুদের দিকে।
-আমরা তখন ক্লাস নাইনের ছাত্র। আমাদের আজকের মন্ত্রী মোটামুটি ব্যাক বেঞ্চার ছিল বলা যায়। ক্লাসে সবসময় নিজেকে গুটিয়ে রাখত আর ভয়ে থাকতো কখন না জানি কোন টিচার তাকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে। ছাত্র হিসেবে সে তেমন খারাপ ছিল বলা যাবে না তবে সে বেশ কয়েকটা টিউশানি করে নিজের পড়ার খরচ চালাত, তাই বোধহয় পড়াশোনার তেমন সময় পেত না।
-তখন একদিন কৃষি মন্ত্রী আমাদের স্কুল ভিজিট করবেন বলে জানানো হল। সে উপলক্ষে মন্ত্রীকে দেখানোর জন্য ফাইভ থেকে টেন পর্যন্ত পর্যন্ত প্রতি ক্লাসকে দুই ভাগে ভাগ করে স্কুলের মাঠে বিভিন্ন জাতের ফলের গাছের প্রদর্শনী করতে নির্দেশ দিলেন হেড মাষ্টার সাহেব।
আমাদের ক্লাসের দুই ভাগের মধ্যে এক ভাগের দায়িত্বে ছিল আমাদের আজকের মন্ত্রী খালেক। খালেকের একটা বিশেষত্ব ছিল, সে কাউকে খুশী করার জন্য চট করে নতুন নতুন কলা কৌশল বের করতে পারত।
এক মাস ধরে আমারা বিভিন্ন গ্রুপ নিজ নিজ প্লটে বিভিন্ন ফলের গাছ টাবে করে বা চারা গাছ তুলে মাটিতে পুতে নিজ নিজ প্লট তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করতে লাগলাম।
হেড মাষ্টার সাহেব প্রতিদিন সবার প্লট একবার করে হলেও পরিদর্শন করতেন আর আমরা একে অপরের প্লটও পরিদর্শন করতাম।
ভিজিটের আগের দিনও হেড মাষ্টার সাহেব সব প্লট পরিদর্শন করলেন। আমারা সবটা না হলেও আমাদের ক্লাসের প্লট দুটো দেখলাম, খালেকেরটা সহ।
মন্ত্রী মহোদয় তার পার্টির গন্যমান্য সদস্য সহ হেডমাষ্টারকে সাথে নিয়ে সব প্লট পরিদর্শন শুরু করলেন। খালেকের প্লট পরিদর্শনের সময় মন্ত্রী মহোদয় আর তার সাথের সবাই অনেক সময়ের জন্য থামলেন সেখানে। দেরী দেখে আমরাও জড় হলাম খালেকের প্লটে।
দেখি খালেকের প্লটে একটা হৃষ্ট পুষ্ট আম গাছের চারার ডালে কয়েকটা আম ঝুলছে। ডিসেম্বর মাসে জূন মাসের আম! সবারই অবাক হওয়ার কথা। তখন বারো মাসি আমের কথা শোনা যেত বটে তবে সে জাত আমাদের অঞ্চলে কেঊ দেখিনি।
মন্ত্রী মহোদয় অবাক হয়ে সেটাই দেখতে লাগলেন। হেড মাষ্টারও একই ভাবে অবাক।
অবাক হওয়ারই কথা, গতকাল পর্যন্ত আমাদের কারো নজরে বিষয়টা পড়ল না! হেড মাষ্টার যিনি গতকালও ভিজিট করেছেন তিনিও চোখ কিছুটা ছানাবড়া করে খালেকের চোখে তাকানোর চেষ্টা করতে লাগলেন।
মন্ত্রী মহোদয় উল্লাস প্রকাশ করলেন। এ ধরনের আমের জাত আমাদের দেশে ছড়িয়ে দেয়ার অভিপ্রায়ও ব্যক্ত করলেন তিনি। খালেককে কাছে ডেকে বেশ কিছুক্ষণ তার সাথে একান্ত ভাবে কথা বলে ওর ভূয়সী প্রশংসা করলেন মন্ত্রী মহোদয়।
যাওয়ার আগে তিনি তার সাথে আসা এ অঞ্চলের রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে বললেন –এ ধরণের কর্মীই আমাদের পার্টিতে দরকার তাহলে দেশের অনেক উন্নতি হবে।
তারপর থেকে খালেককে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। সে রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রিকৃত কর্মী হল আর কলেজ জীবন শেষ করেই পুরোপুরি রাজনৈতিক নেতা হয়ে উঠল। সে ধারায় আজ সে মন্ত্রী।

তারা কথা বলার ফাঁকে মন্ত্রী মহোদয় কলেজ গেটে হাজির হলেন। তাকে অভ্যর্থনা করার জন্য তার সাঙ্গ পাঙ্গরা সব তৎপর হয়ে উঠল।
দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মন্ত্রীর সহপাঠীরা কেউ এগিয়ে না গেলেও তাদের সবারই অলক্ষে ছদর দৌড়ে মন্ত্রী মহোদয়ের অভ্যর্থনা লাইনের সর্বাগ্রে গিয়ে দাড়াল।
-স্যার, দেরী যখন হয়েছেই তখন প্রিন্সিপাল স্যারের রুমে বসে আগে ডাবের পানি খেয়ে একটু বিশ্রাম নিয়ে নিন। তারপর না হয় সবার উদ্দেশ্যে কথা বলবেন।
ছদর হাফাতে হাফাতে মন্ত্রীর সামনে উপস্থিত হয়ে তার এহেন আচমকা আচরনের জন্য না মন্ত্রীর সাঙ্গ পাঙ্গরা না কলেজের ম্যনেজমেন্ট কমিটির কেঊ প্রস্তুত ছিল।
সবাই অবাক চোখে তাকাল ছদরের দিকে।
মন্ত্রী মহোদয়ও থেমে তাকালেন তার দিকে।
-আরে, ওতো আমার মনের কথাই বলেছে। আমার সত্যিই ডাবের তেষ্টা পেয়েছে।
-স্যার, আপনি যখন এ কলেজের ছাত্র ছিলেন সে সময়ে লাগান গাছে প্রচুর ডাব এসেছে আমি পাড়ার ব্যবস্থা করছি।
এ সময়ের ছাত্র তার অবদানের কথা মনে রেখেছে সেটা ভেবে মন্ত্রী সত্যিই খুশী হলেন।
ছদরকে কাছে ডেকে ওর কাঁধে স্নেহভরে হাত রেখে ওর নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করলেন।
-স্যার, আমার আসল নাম ছদরুদ্দিন ছেঁদা, সবাই আমাকে ছদর বলে ডাকে। আপনার দাদাজান ছদর উদ্দিন বিশ্বাসের নামের সাথে মিলিয়ে আমার বাবা নাকি আমার নাম রেখেছিলেন। অনেক গুণী মানুষ ছিলেন আপনার দাদা, আমি ওত জানিনা তবে বাবা জানেন সে সব কথা।
মন্ত্রীর দাদার নাম যে ছদর উদ্দিন বিশ্বাস সেটা ঠিক। কিন্তু সেত একজন সাধারণ কৃষক ছিল তার নামে ছেলের নাম রাখার ব্যপারটা মন্ত্রী সহ উপস্থিত সবার নজর কাড়ল। আর প্রকৃতই মন্ত্রী নিজে বাদে এখানকার কেউই মন্ত্রীর দাদর নাম জানার কথা না।
উপস্থিত সবাই ছানাবড়া চোখে তাকিয়ে ছদরুদ্দিন ছেঁদার দিকে। মন্ত্রীর সাঙ্গ পাঙ্গরাও ছেঁদার সামনে শিশুর মত হয়ে নির্বাক তাকিয়ে রইল।
মন্ত্রী খালেক বিশ্বাস ছেঁদার কাঁধে হাত রেখেই কথা বলছিলেন। তার অখ্যাত দাদার এত প্রশংসা করার ব্যপারটা তাকে কিছুটা বিব্রত করলেও তিনি ওর কাঁধে রাখা হাতটা সরালেন না।

ছদরের প্রস্তাব অনুযায়ী প্রিন্সিপালের অফিসে বসে ডাবের পানি খেতে খেতে নানা স্মৃতি চারনে দুপুর গড়িয়ে গেল। মন্ত্রী মহোদয় সবার সাথে কথা বলার জন্য এই গরমে অডিটোরিয়ামে না গিয়ে সবাইকে বাইরে গাছের ছায়তে দাড় করিয়ে কথা বললেন। সেই সকাল থেকে অপেক্ষারত সবাই যেন বেচে গেল।
আর সত্যিই বেচে গেল বদর। তাকে আর স্বাগত বক্তব্য দিতে না। না হলে যে কি হত!
–ছদরুদ্দিন ছেঁদাকে আমার কাছে আজ সন্ধ্যায় নিয়ে এস। এর মত কর্মীই আমাদের দরকার।
যাওয়ার আগে মন্ত্রী তার সাঙ্গ পাঙ্গদের উদ্দেশ্য করে বললেন।
-ঠিক আছে ছদর, তাহলে আজ রাতে দেখা হচ্ছে। চিন্তা করোনা আমার গাড়ী তোমাকে নিয়ে আসবে আবার পৌঁছে দিয়ে যাবে।
শেষ কথাটা ছদরুদ্দিন ছেঁদাকে বলে গাড়ীতে উঠলেন মন্ত্রী মহোদয়।