জীবনের অর্থ খোঁজার প্রয়াসে ছন্দ কবিতা 'নিঃশেষেই মুক্তি'।

আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩, ১৭:৫২

নিঃশেষেই মুক্তি

 

তরু লতা শাখে শাখে নানা রং গন্ধ মেখে
পুষ্পভরণা সবে, পুস্পমঞ্জরি ভরে সারা অঙ্গসৌষ্ঠবে।

সূর্যালোক প্রভাতে, শুষে নেয় শিশির বিন্দু পাপড়িতে
ভরা মধুকাল ফুরফুরে পুস্পদল,
ছেড়ে মধুমতীপুরী নেচে নেচে আনন্দে গুঞ্জরি
মধুকর আসে ঝাঁকে ঝাঁকে।

ফুল থেকে ফল হবে, ডাল পালা ভরে যাবে
দেয়ার সুখ স্বপ্নে আছে ডুবে, বিমূর্ত বিটপী সবে।

মধুকর সব করে রব, দলে দলে সবে মিলে
ফুল থেকে ফুলে এসে উড়ে উড়ে বসে, হেলে দুলে।
রেণুতে ভরে সারা অঙ্গ মুখ, দেহ মনে কত সুখ
মন ভরে মধু আহরণ করে, যায় নীড়ে ফিরে।

বৃক্ষরাজি মুকুলে মুকুলে সাজি, নিজ নিজ শাখা
ঠিক যেন ছবি আঁকা।
মধুকর মধু নিয়ে ফিরে যায় ঘরে
দিয়ে যায় ফল শাখা ভরে।

মধুকর ভরে কুঠুরি তারি মধু নিয়ে দলে দলে
বৃক্ষরাজি ভরে নিজ শাখা ফলে ফলে।

উড়ন্ত মিলনে মক্ষীরানি, তৃপ্ত করে দেহখানি,
প্রাণ ভরি লীলাখেলা সাঙ্গ করি, যায় ফিরে ঘরে।
পুং মউ সবে জানি, জন্ম যার প্রজননের সাধনী
মিলনের শেষে, প্রাণহীন বেশে লুটিয়ে পড়ে ভূতলে।

মৌয়ালেরা নিয়ে যায় পুরো মধু চাকটায়
নিজ নিজ ঘরে।
মহাজন নিয়ে যায় যত ফসল তার সবটায়,
নিজ গোলা ভরে।

তরু শাখা মেলে পাখা, ভার মুক্ত হয়ে
এতকাল ধরে নিজ ফল ভারে, যা ছিল নুইয়ে।
নিঃস্ব হয়ে তবে বুক ফুলিয়ে সবে, শির উঠায়
ভারমুক্ত অবয়, দানে তৃপ্ত হৃদয়
তাকায় আকাশের নীলিমায়।

নিঃশেষ হলে পায় ঐহিক মুক্তি সবাই
যেমন মুক্তা দানে শুক্তি ঋণমুক্ত হয়।

দেয়াতে সুখ, দানেতে নেই কোন দুখ কেবলই প্রশান্তি
ভোগে হয় ক্ষয়, রিপু’র হয় জয়, আনে ক্লান্তি।
দেয়া আর দান গুণ স্বয়ং বিধাতার
এটাই জনমের অভিপ্রায়, জীবনের সার।